তন্তুজ থেকে বরাত মিলতেই পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার দর্জিরা তৈরী করছেন পিপিই কিট ও মাস্ক

28th May 2020 বর্ধমান
তন্তুজ থেকে বরাত মিলতেই পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার দর্জিরা তৈরী করছেন পিপিই কিট ও মাস্ক


বাবু সিদ্ধান্ত ( বর্ধমান ) : রাজ‍্য‍  সরকারের সংস্থা তন্তুজ পাশে দাড়ানোয়  লক ডাউনে মুখে হাসি ফুটেছে পোষাক তৈরির কারিগরদের ।তবে তন্তুজের বরাত অনুযায়ী পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার পোষাক  তৈরির কারিগররা কোন সাধারণ  পোষাক  তৈরি করছেন না ।তাঁরা এখন শুধুমাত্র  বাংলার করোনা যোদ্ধাদের জন্য বিশেষ  পোষাক তৈরি করছেন । যার পোষাকি নাম ‘পিপিই কিট ’।  পাশা পাশি করোনা সংক্রমন থেকে রক্ষা পাবার মাস্কও  তারা তৈরি করছেন। 


করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার কাজে পিপিই কিটের গুরুত্ব অপরিসীম ।তেমনই প্রয়োজন মাস্কের । সেই কিট ও মাস্কের যোগান দিতে শয়ে শয়ে দর্জি দিন রাত এক করে এখন কাটোয়ার পোষাক কারখানায় বসে কাজ করে চলেছেন ।তাঁদের তৈরি  ৫০ হাজার কিট ইতিমধ্যেই  তন্তুজকে সরবরাহ করা হয়ে গিয়েছে । এখনও আরো বহু কিট তারা যোগান দেবে । পাল্লা দিয়ে চলছে মাস্ক তৈরির কাজও।আর এই  পিপিই কিট ও মাস্ক তৈরির কাজ করেই এই  কঠিন সময়ে আর্থিক সমস্যা অনেকটাই লাঘব হয়েছে কাটোয়ার  দর্জিদের।  । কাটোয়া শহরেরই বসবাস করেন দর্জি  জয় ভৌমিক ও সুকুমার দত্ত । বুধবার তারা জানালেন, “লকডাউন চলায় তাঁরা দোকান খুলতে পারননি । ফলে তাঁদের পোষাক তৈরির কাজ বন্ধ হয়েযায় । দোকান বন্ধ রাখতে হওয়ায়  রোজগারও  বন্ধ হয়ে যায় । সংসার কিভাবে চালাবেন তা ভেবে উঠতে পারছিলেন না ।  কিন্তু এখন সেই দুঃশ্চিন্তা কেটেছে । পিপিই কিট ও মাস্ক  তৈরি করার কাজ পেয়েছি। তাত জন্যই  রোজগার পথ খুলে গেছে । লকডাউন চললেও  সংসার চালাতে সমস্যা হচ্ছে না ।”

 

কাটোয়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে একটি পোষাক তৈরির কারখানা। তার  কর্ণধার দীপা আগরওয়াল জানান  ,‘তাঁর গারমেন্টস ফ্যাক্টরিতে মূলত খাদি ও হ্যান্ডলুমের চুড়িদার, স্কার্ট ফ্রক  ইত্যাদি তৈরি হয় ।শারদোৎসব  কিংবা ইদের আগে আগে পোষাক তৈরির কাজের চাপ বহুগুন বেড়ে যায় । কিন্তু এবছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে সবকিছুরই উলট
 পালট  ঘটে গেছে । লক ডাউন চালু হবার পর  তাঁদের গারমেন্টস ফ্যাক্টরিতেও থমকে যায়  পোষাক তৈরির কাজ  । দর্জিরা সকলেই কর্মহীন হয়ে পড়েন । এই অবস্থার মধ্যে তন্তজ সংস্থা মাধ্যমে  পিপিই কিট ও মাস্ক তৈরির বরাত মেলায় কিছুটা হলেও দর্জিদের মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছেন। এখন চুড়িদার , স্কার্ট ফ্রক তৈরির ভাবনা একেবাবে ছেড়ে দিয়ে দিন রাত এক করে ফ্যাকটরিতে  শুধুই  চলছে পিপিই কিট ও মাস্ক তৈরির কাজ । দীপা আগরওয়াল বলেন , তাঁদের শতাধীক দর্জি মিলে প্রতিদিন তৈরি করছে  প্রায়  ২০০০ কিট । ইতিমধ্যে ৫০ হাজার কিট তন্তুজকে সরবরাহ করে দিয়েছেন । তন্তুজ থেকে ৫০ হাজার পিস মাস্ক  তৈরিরও বরাত মিলেছে । সেই মাস্কও এখন জোর কদমে তৈরি হচ্ছে । ’এই বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন ,“করোনা মোকাবিলায় রাজ্যে  পিপিই কিট ও মাস্কের  চাহিদা যথেষ্ট বেড়েছে । সেই চাহিদা পূরণের জন্য রাজ্য  সরকারের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে” । 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।